ঢাকা: ‘দেশের সার্বিক অবস্থায় আমরা হাসতে ভুলে গেছি’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আমরা প্রিয়জনকে শুভেচ্ছা জানাতে ভুলে গেছি। আমরা নিরাপদে রাস্তা অতিক্রম করতে ভয় পাই, নিরাপদে বাড়িতে থাকতেও ভয় পাই। এখানে জীবনের কোনো মূল্য নেই।

শনিবার (২৩ এপ্রিল) ইস্কাটনের লেডিস ক্লাবে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) আয়োজিত আলোচনা সভা, দোয়া ও ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।

নিউমার্কেটের সংঘর্ষ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, কুরিয়ার সার্ভিসের কর্মী নাহিদকে হেলমেটধারীরা কুপিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে। মিডিয়া আইডেন্টিফাই (শনাক্ত) করেছে হেলমেটধারী তিনজনই ছাত্রলীগকর্মী। এখন গ্রেফতার হলেন কে? বিএনপি নেতা। শুধু তিনি গ্রেফতারই হননি, আরও ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দেওয়া হয়েছে, তাদের সবাই বিএনপি এবং ছাত্রদলের নেতা। এটাই হচ্ছে আওয়ামী লীগের আসল চরিত্র। ভুল করবে তারা, আগুন দিয়ে বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়ে আবার সেই বাড়ির সামনে গিয়ে দুস্থের সামনে ত্রাণ নিয়ে হাজির হবে।

আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, এটা পুরোনো খেলা তাদের, তারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে বিএনপির নাম দেবে। এর আগে আগুন জ্বালিয়েছে, আর নাম দিয়েছে বিএনপির। এভাবে অসংখ্য গায়েবি মামলা তারা দিয়েছে। এই গায়েবি মামলা, গুম-খুন দিয়েই তারা টিকে রয়েছে। এ না হলে তারা টিকে থাকতে পারতো না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, আমলা, প্রশাসন, বিচার বিভাগ- এদের সহযোগিতা নিয়ে তারা টিকে আছে।

খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ জানিয়ে বিএনপির মুখপাত্র বলেন, দোয়া করবো আল্লার কাছে, আল্লাহ যেন তাকে দ্রুত সুস্থ করে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দেন। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দীর্ঘদিন ধরে নির্বাসিত অবস্থায় বিদেশে কাটাচ্ছেন। আমরা দোয়া করবো তিনি যেন আমাদের কাছে ফিরে আসেন। আমরা দোয়া করবো পরম করুণাময় আল্লাহ তায়ালা এই ভয়াবহ শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি, এই অবস্থা থেকে যেন আমাদের মুক্ত করেন।

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, আজ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দাবি করে যে তারা ভালো কাজ করেছে। তার প্রমাণ হচ্ছে ২৩ হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছে করোনার সময়। শুধু তাই নয়, পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থাটাকেই সরকার ভেঙে দিয়েছে।

তিনি বলেন, আল্লাহ যেন আমাদের এই ভয়াবহ দানবীয় সরকারের হাত থেকে মুক্তি দেন। দেশে আমরা যেন সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক একটি সরকার, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি এবং একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্যদিয়ে জনগণের প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার গঠন করতে পারি। সেটাই হোক আমাদের দোয়া।

ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব ডা. মো. আব্দুস সালাম এবং দপ্তর সম্পাদক ডা. ফখরুজ্জামানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, কবি আবদুল হাই শিকদার, যুগ্ম-সচিব সৈয়দ মোহাম্মদ, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, ড্যাবের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. একেএম আজিজুল হক, ড্যাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি ডা. আবদুস সেলিম, কোষাধ্যক্ষ ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল, সহ-সভাপতি অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান সরদার, মুস্তাক রহিম সপণ, শাহ মোহাম্মদ আমানুল্লাহ, পারভেজ রেজা কাকন।

এছাড়াও সাংবাদিক নেতা কাদের চৌধুরী, শহিদুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভুইয়া জুয়েল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মোরশেদ আলম, ছাত্রদলের ইডেন কলেজ শাখার সাবেক আহ্বায়ক সেলিনা সুলতানা নিশিতা, ওলামা দলের মাওলানা শাহ মোহাম্মদ নেসারুল হক, ঢাকা দক্ষিণ যুবদলের আহ্বায়ক গোলাম মাওলা শাহিন, বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদার, শায়রুল কবির খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।