1. monirsherpur1981@gmail.com : banglar kagoj : banglar kagoj
  2. admin@banglarkagoj.net : admin :
বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০৫:২৪ অপরাহ্ন

কৃষককে তুলে নিয়ে টাকা দাবি, এএসআই সাসপেন্ড

  • আপডেট টাইম :: শুক্রবার, ২২ মার্চ, ২০২৪

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলায় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে আলমগীর হোসেন (৪০) নামে এক কৃষককে তুলে নিয়ে টাকা দাবির অভিযোগে কমলনগর থানার এএসআই আমিনুল ইসলামকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোহিদুল ইসলাম শুক্রবার (২২ মার্চ) বলেন, থানাকে অবহিত না করে আসামি ধরতে যাওয়ার কারণে এএসআইকে সাপপেন্ড করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী আলমগীর রামগতি উপজেলার চর বাদাম ইউনিয়নের চরসীতা গ্রামের কালা মিয়ার ছেলে। তিনি পেশায় কৃষক।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার রাতে কমলনগর থানার এএসআই আমিনুল ইসলাম কয়েকজন সোর্সকে সঙ্গে নিয়ে আলমগীর হোসেন নামে ওই কৃষককে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে আটক করে তুলে নিয়ে যান। তিনি কমলনগর থানার দায়িত্বে থাকলেও পাশ্ববর্তী রামগতি থানাধীন চরসীতা গ্রামে গিয়ে ওই কৃষককে আটক করেন এবং কমলনগরের ফজুমিয়ারহাট সংলগ্ন একটি নির্জন স্থানে আটক রেখে ৬০ হাজার টাকা দাবি করেন। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় লোকজন এবং আলমগীরের স্বজনদের সন্দেহ হলে তারা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে জানতে পারেন- পুলিশ কর্মকর্তা আমিনুল থানার অনুমতি ছাড়াই ওই কৃষককে আটক করেছেন। পরে এলাকার লোকজনের সঙ্গে এএসআই আমিনুলের ধ্বস্তাধস্তি হয়। এতে আমিনুল আহত হন। পরে তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসা নেন। পরদিন বুধবার এএসআইকে সাসপেন্ড করা হয়।

আলমগীরের স্ত্রী শাহিদা বেগম বলেন, গত মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে আমার স্বামী বাড়ির পাশের একটি দোকান থেকে সদাই কিনছিলেন। এসময় ৪ থেকে ৫ জন লোক জোর করে আলমগীরকে অটোরিকশায় তুলে নিয়ে যান। দোকানে থাকা লোকজন আমাদেরকে বিষয়টি জানান। পরে আমার স্বামীর ব্যবহৃত মুঠোফোনে কল দিলে অপরিচিত একজন রিসিভ করেন। তিনি আমার স্বামীকে ছাড়িয়ে নিতে ৬০ হাজার টাকা নিয়ে কমলনগরের ফজুমিয়ারহাট বাজারে পশ্চিমে যেতে বলেন। আমরা আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে সেখানে গিয়ে তাদের পরিচয় জিজ্ঞেস করলে তারা ডিবি (গোয়েন্দা) পুলিশের সদস্য হিসেবে পরিচয় দেন। তাদের পরিচয়পত্র দেখাতে বললে, তালবাহানা করেন এবং আলমগীরকে ছাড়িয়ে নিতে টাকা দাবি করেন। এসময় ওই স্থানে আরও লোকজন জড়ো হয়। সবার সন্দেহ হলে ডিবি পুলিশ পরিচয়দানকারীদের সঙ্গে এলাকার লোকজনদের হাতাহাতি এবং হট্টগোল হয়।

আলমগীরের ভাতিজা মো. রাজু বলেন, আমি আমার চাচার চিৎকার শুনে ঘর থেকে বের হই। দেখি তাকে জোর করে একটি অটোরিকশায় তুলে নেওয়া হচ্ছে। আমি আমার চাচার মুঠোফোনে কল দিলে অপরিচিত একজন আমাকে ৬০ হাজার টাকা নিয়ে এসে চাচাকে ছাড়িয়ে নিতে বলেন। শুধুমাত্র আমরা দুইজন গিয়ে যাতে ফজুমিয়ারহাট থেকে আমার চাচাকে নিয়ে আসি। পরবর্তীতে আমরা কয়েকজন যাই। আমার চাচাকে একটি নির্জন বাগানে রাখা হয়। সেখানে তাদের পরিচয় নিয়ে সন্দেহ হয়, স্থানীয় লোকজনও চলে আসেন। এসময় লোকজন তাদের মারধর করেন।

রাজু আরও বলেন, তাদের পরিচয় নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় আমরা জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল দিলে কমলনগর থানাকে জানায়। পরে পুলিশ এসে তাদের নিয়ে যায়।

আলমগীরের ভাই হাসেম বলেন, তাদের পরিচয় জানতে আমরা থানার ওসি এবং ডিবি পুলিশের কাছে ফোন করি। তাদের কোনো টিম অভিযানে ছিল না বলে আমাদের জানায়। পরে উপস্থিত লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে অভিযুক্তদের মারধর করেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত এএসআই আমিনুল ইসলাম বলেন, একজন মাদক ব্যবসায়ী রাস্তার ওপর মাদক বিক্রি করছেন বলে সোর্সের মাধ্যমে খবর আসে। ওই আসামিকে মাদকসহ গ্রেপ্তার করি। ফজুমিয়ারহাট বাজারে পাশে আসলে আসামির লোকজন আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। আমার হ্যান্ডক্যাপ, মানিব্যাগ নিয়ে যায়। আমাকে টর্চার করে। আমি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছি।

কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোহিদুল ইসলাম বলেন, কোনো আসামি ধরতে হলে থানার অনুমতি নিয়ে অভিযানে যেতে হয়। কিন্তু, এএসআই আমিনুল অনুমতি না নিয়ে আসামি আটক করতে যান। এ জন্য তাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।

আসামিকে তুলে নিয়ে মুক্তিপণ দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়টি আমার জানা নেই।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2011-2020 BanglarKagoj.Net
Theme Developed By ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!