1. monirsherpur1981@gmail.com : banglar kagoj : banglar kagoj
  2. admin@banglarkagoj.net : admin :
শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:২৩ পূর্বাহ্ন

বান্দরবানে বাড়ছে করোনা রোগী, হাসপাতালে নেই পর্যাপ্ত শয্যা

  • আপডেট টাইম :: শুক্রবার, ১৯ জুন, ২০২০

এন এ জাকির, বান্দরবান : বান্দরবানে দিন দিন করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় শয্যা সঙ্কটে পড়েছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। গত মার্চ মাসে দেশে করোনা সংক্রমন দেখা দিলে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় বান্দরবান জেলার সাত উপজেলায় ১৩০ শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ড প্রস্তুত করে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
কিন্তু ইতোমধ্যে বান্দরবান জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়েছে ১৩৯ জন যা ধারন ক্ষমতার চেয়ে বেশি। আক্রান্তের হার যদি বাড়তে থাকে তাহলে আক্রান্ত রোগীদের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেয়ার জন্য শয্যার সংকুলান হবে না বলে মনে করছেন জেলা সিভিল সার্জন। তাই পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে জেলায় ফিল্ড হাসপাতাল প্রস্তুত করা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। এছাড়া করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দেয়া কষ্ট সাধ্য হয়ে পড়বে।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বান্দরবান জেলায় করোনা আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসায় সাত উপজেলায় ১৩০ শয্যার করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ড প্রস্তুত করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এরমধ্যে জেলা সদর হাসপাতালে ১০০ শয্যার এবং বাকী ৬ উপজেলায় ৫টি করে করোনা আইসোলেশন শয্যা রয়েছে। বান্দরবানে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় ১৬ এপ্রিল নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমে। এরপর গত দুই মাসে জেলায় করোনা আক্রান্ত হয় ৪০ জনের মত। কিন্তু গেল দু সপ্তাহে এ সংখ্যা বেড়ে দাড়ায় ১৩৯ জনে। এর মধ্যে গেল সপ্তাহে শুধু সদরেই আক্রান্ত হয় ৫৮ জন একদিনে সর্ব্বোচ্চ আক্রান্ত হয় ২২ জন এনিয়ে জেলা সদরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৯৬ জন।
এদিকে লামা উপজেলায় আক্রান্তের সংখ্যা এক দিনেই ৬জন আর আইসোলেশন শয্যা ৫টি। এদের মধ্যে অনেকের উপসর্গ না থাকায় কেউ কেউ বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছে এবং কেউ কেউ হাসপাতালের আইসোলেশনে চিকিৎসা নিচ্ছে। তবে গত কয়েকদিনে যে হারে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে সেটা যদি অব্যাহত থাকে সেক্ষেত্রে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে শয্যা সঙ্কটের কারনে করোনা রোগীর চিকিৎসা দেয়া কষ্টসাধ্য হবে বলে জানান বান্দরবান করোনা ইউনিটের প্রধান ডা. প্রত্যুষ পল।
তিনি বলেন, আমরা সদর হাসপাতালের নার্সিং কলেজে ১০০ শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ড প্রস্তুত করেছি। আমাদের এখানে পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা নেই আইসিইউ নেই পর্যাপ্ত অক্সিজেন সিলিন্ডারও নেই। তারপরও আমরা সর্ব্বোচ্চ ১০০ জন রোগীকে রাখার ব্যবস্থা করতে পারব। কিন্তু যে হারে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে এভাবে যদি বাড়তে থাকে তাহলে আমরা বাড়তি রোগীকে অন্যান্য সুযোগ সুবিধা তো দিতে পারবই না, শয্যাও দিতে পারব না।
তিনি আরো বলেন, আমাদের এখানে শুধু করোনা রোগী নয় সাসপেক্টেড কোভিড ১৯ অনেক রোগীও রয়েছে। বর্তমানে ১৯জন করোনা রোগী এবং ৭ জন সাসপেক্ট রোগী রয়েছে। অনেকে সুস্থ হয়ে চলে গেছে। সে কারনে এখন পর্যন্ত আমরা করোনা রোগীদের শয্যা দিতে পারছি। তবে রোগী যদি বেড়ে যায় তখন আমরা তাদের ভর্তি করতে হিমশিম খাবো। কারন একজন রোগী মিনিমাম ১৪ দিন আইসোলেশনে থাকে। সে হিসেবে একটা সীট খালি হতে ১৪ দিন লাগে। তাই পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে বান্দরবানে দুটি প্রাইভেট ক্লিনিক রয়েছে। সেগুলোকে করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ড হিসেবে প্রস্তুত করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে সকলের সমন্বয় প্রয়োজন। কারন স্বাস্থ্য বিভাগের একার পক্ষে এটা সম্ভব নয়।
বান্দরবান জেলার সিভিল সার্জন ডা. অং সুই প্রু মার্মা বলেন, যে হারে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে এটা যদি চলমান থাকে তবে করোনা রোগীকে শয্যা দিতে কষ্ট হয়ে যাবে। তাই বান্দরবানে একটি ফিল্ড হাসপাতাল প্রস্তুত করা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন জনপ্রতিনিধি সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। সরকারী স্কুল টাউন হল আবাসিক হোটেল যে কোন একটাকে করোনা চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল হিসেবে প্রস্তুত করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সাপোর্ট রোগী আনার জন্য পরিবহন এবং জনবলও দিতে হবে। অন্য উপজেলার রোগীকে সদরে আনা যাবে না তাদেরকে স্ব স্ব উপজেলায় স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় সরকারী স্কুল বা টাউন হলগুলোতে আইসোলেশন ওয়ার্ড তৈরী করতে হবে। এজন্য স্থানীয় প্রশাসন জনপ্রিতনিধি সবাইকে সমন্বয় করতে হবে। সবাইকে মিলে একসাথে করোনার মোকাবেলা করতে হবে। করোনা সংক্রমনের শুরু থেকেই আমরা বিভিন্ন চাহিদার কথা বলে আসছি বিশেষ করে অক্সিজেন সিলিন্ডার কিন্তু এখনো আমরা তা পাইনি তবে ইতোমধ্যে আমরা আরো ১৫টি অক্সিজেন ক্রয় করেছি এমএসআর খাতের টাকা দিয়ে। এখন সবাই বুঝতেছে অক্সিজেন এর চাহিদা আমরা সেটা অনেক আগেই বলেছি। তাই আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে পারলে করোনা আক্রান্তদের আমরা চিকিৎসা দিতে পারব। আর করোনা সংক্রমন ঠেকাতে হলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে আমাদের নিজেদের সচেতন হতে হবে যাদের উপসর্গ নেই তারা বাসায় থেকে চিকিৎসা নিবে যাদের অক্সিজেন এর দরকার হবে তারা হাসপাতালে আসবে সবাই যদি হাসপাতালে আসে সেক্ষেত্রে আমাদের পক্ষে শয্যা দেয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে।
উল্লেখ্য, ইতোমধ্যে বান্দরবানে করোনা আক্রান্ত হয়েছে পার্বত্যমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি জেলা প্রশাসক দাউদুল ইসলামসহ রাজনৈতিক ও প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাসহ ১৩৯ জন। এর মধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে জেলায় মারা গেছে একজন।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2011-2020 BanglarKagoj.Net
Theme Developed By ThemesBazar.Com