দুদু মল্লিক, ঝিনাইগাতী (শেরপুর) : দরিদ্র কৃষকের ছেলে শরিফুল ইসলাম পুলিশের কনস্টেবল হিসেবে যোগদান করেন। এরপর পদোন্নতি পেয়ে হন পুলিশের এএসআই। পুলিশ সদর দপ্তরে অতিরিক্ত আইজিপি মোখলেছুর রহমান পান্নার গানম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন শরিফুল। আর এসবের মধ্যেই আয় বহির্ভূত সম্পদ গড়েন পুলিশ সদর দপ্তর ঢাকায় প্রেষণে কর্মরত এএসআই শরিফুল ইসলাম (বিপি নং- ৮০০০০১৬৭১২)। শরিফুলের বাড়ি শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার চৈতাজানি চেঙ্গুরিয়া গ্রামে।

সূত্রমতে, কয়েক বছরের মধ্যে তিনি নিজ গ্রাম চৈতাজানি চেঙ্গুরিয়া, পার্শ্ববর্তী এলাকা ও জেলা শহরে জমি ক্রয় করেন। যার বর্তমান বাজার মূল্য কয়েক কোটি টাকা। শেরপুর শহরের গৌরীপুর মহল্লায় রয়েছে তার পাঁচতলা বাড়ি। বাড়িটির বাজার মূল্য দুই কোটি টাকার উপরে। অভিযোগ রয়েছে, পৌরসভার অনুমতি ব্যতীত পৌর কোড অমান্য করে তিনি ভবনটি নির্মাণ করেন। তার এ ভবনটি নির্মাণে দুর্ভোগের ফলে প্রতিবেশি চিকিৎসক ডাঃ হেফজুল বারী খান ২০১৯ সালের ৩ অক্টোবর দুর্নীতি দমন কমিশনে লিখিত অভিযোগ করেন। দুদক অভিযোগটি তদন্ত না করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশ সদর দপ্তরে পাঠায়। পুলিশ সদর দপ্তর থেকে অভিযোগ তদন্তের জন্য পাঠানো হয় শেরপুরের পুলিশ সুপার কার্যালয়ে। তৎকালীন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল আমিনুল ইসলাম অভিযোগটি তদন্ত করেন। কিন্তু শরিফুল ইসলামকে দায় মুক্তি দিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয় পুলিশ সদর দপ্তরে। এমতাবস্থায় পুনরায় সুষ্ঠু তদন্ত চেয়ে গেল বছরের ২৭ এপ্রিল আইজিপি বরাবর আবেদন করেন ডাঃ হেফজুল বারী খান। এতেও কোন সাড়া না পেয়ে শেরপুর জেলা দায়রা জজ আদালতে দুর্নীতি দমন আইনে একই বছরের ৮ মে পুলিশ সদস্য শরিফুলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন তিনি। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে উপ-পরিচালক দুর্নীতি দমন কমিশন এর সমন্বিত কার্যালয় জামালপুরকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। তবে অদ্যাবধি দুর্নীতি দমন কমিশন জামালপুর থেকে কোন তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হয়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুদকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। পুলিশের এএসআই শরিফুল ইসলামের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে তার মতামত নিতে চেষ্টা করা হলে মোবাইল ফোনের সংযোগ পাওয়া যায়নি।

শরিফুলের সহোদর ভাই শহিদুল ইসলামের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে বারবার চেষ্টা করে হলেও ফোন রিসিভ করেননি।